যশোর শহরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নির্মাণাধীন দশতলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেল পোনে ৪টার দিকে সরকারি এমএম কলেজের দক্ষিণ গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান যশোর কোতয়ালি থানার এসআই শহিদুল ইসলাম।
নিহত সাজ্জাদ হোসেন (২৭) সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের মঠবাড়িয়া গ্রামের আজাহার হোসেনের ছেলে।
এসকেনচিউর নিলাচল টাওয়ার নামে নির্মাণাধীন ওই ভবনের নির্মাণ শ্রমিক আশানুর রহমান জানান, ভবনে তারা পলেস্তারের কাজ করছেন। এ জন্য কপিকলের সাহয্যে ছাদে বালি ও সিমেন্ট উঠিয়ে কাজ করেন। আবার ওই কপিকলের সাহায্যে ময়লা আবর্জনা নিচে নামানো হয়। বিকেলে ছাদে দাঁড়িয়ে কপিকলে ময়লা আবর্জনা নামানোর কাজ করছিলেন সাজ্জাদ হোসেন। এ সময় ভবনের কাছে থাকা বৈদ্যুতিক ৪৪০ ভোল্টের খোলা তারের সাথে কপিকলের তারের স্পর্শ লাগলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন সাজ্জাদ হোসেন এবং নিচে পড়ে যান। ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
প্রতক্ষ্যদর্শী পথচারী নাদিয়া ইসলাম জানান, বিকেলে তিনি বাড়ি থেকে তার কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই তার সামনে ওই ভবনের ছাদ থেকে এক ব্যক্তি নিচে পড়ে যান। এতে ওই ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই মারা যান। ঘটনাস্থলে আরো দুই জন শ্রমিক ছিলেন। নিচে পড়ে যে ব্যক্তি মারা গেছেন তার নাক, মুখ ও কান দিয়ে প্রচুর রক্ত ঝরছিলো। তিনি বলেন, তার সামনেই এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা।
নিহতের চাচাতো ভাই সুমন হোসেন জানান, সাজ্জাদ হোসেনের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনিসহ কয়েকজন স্বজন ছুটে এসেছেন। নিহত সাজ্জাদ হোসেন ৩ ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। আড়াই বছর হলো সাজ্জাদ হোসেন বিয়ে করেছেন।
খবর পেয়ে নিহত সাজ্জাদ হোসেনের মা ও শাশুড়িও ইজিবাইকে করে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ সময় তাদের আহাজারিতে সেখানে এক হৃদয়বিদায়ক ঘটনার অবতারণা হয়। ভবনে কর্মরত নির্মাণ শ্রমিকেরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, কপিকল দিয়ে কাজ করার সময় অসাবধানবশত বিদ্যুতের তারের সাথে কপি কলের তারের স্পর্শ লাগলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ১০ তলার ছাদ থেকে পড়ে সাজ্জাদ হোসেন নামে ওই শ্রমিক মারা যান বলে তিনি স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন।
একসেনচিউর নিলাচল টাওয়ার নামে ওই ভবনের মালিক নান্নু নামে এক ব্যক্তি। তার ভবন নির্মাণ কাজের ব্যবস্থাপক মিথুন জানান, ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। এজন্য তারা অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করছেন। তাছাড়া তারা নিহত সাজ্জাদ হোসেনের পরিবারের পাশে থাকবেন। তাদের ভবন মালিক তাকে একথা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১ জুলাই খড়কির সার্কিট হাউজ পাড়ায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের ঝুল বারান্দা ধসে নিচে পড়ে দুই জন প্রকৌশলীসহ ৩ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয় I
যশোর জেলা প্রতিনিধি।।
মোঃ তারিক হাসান (রকি)