ঢাকা | বঙ্গাব্দ |

উত্তরায় জামাত নেতার কান্ড, কিডন্যাপ শেষে পিটিয়ে ভেঙে দিলেন পা

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Oct 27, 2025 ইং
সবুজ বাংলাদেশ ছবির ক্যাপশন: সবুজ বাংলাদেশ
ad728
উত্তরা দিয়াবাড়ী থেকে এনামুল হক নামের এক  ব্যবসায়ীকে কিডন্যাপ করে  দর্পণ প্রজেক্টের ভিতর নিয়ে আটক রেখে  বাঁশ কাঠ দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কথিত জামাত নেতা শাহ মোঃ ফয়সাল বিন রহমানের বিরুদ্ধে। 
 
 
ইঞ্জিনিয়ার শাহ ফয়সাল বিন রহমান দর্পণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।জানা যায়, গত ১৩/১০/২০২৫ ইং তারিখ দুপুরের দিকে উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে শাহ ফয়সাল বিন রহমান দলবল নিয়ে এনামুল হককে কিডন্যাপ করে গাড়িতে তুলে কালিয়ারটেক তার আস্তানায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে সারারাত আটক রেখে কয়েক দফা শারীরিক নির্যাতন করেন। এতে তার পা ভেঙে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যায়।ঘটনার প্রায় ২৪ ঘন্টা পর গত ১৪/১০/২০২৫ ইং তারিখ ভুক্তভোগী এমামুলের স্ত্রী সাজেদা আফরিন তার স্বামী কিডন্যাপের বিষয়টি  জানতে পেরে ৯৯৯ ফোন করে পুলিশের কাছে সহযোগিতা চান। খবর পেয়ে তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে পুলিশ সদস্য এস আই স্বাসত দত্ত তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন । তিনি প্রথমে তার স্রীকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে পিছনে পিছনে  নিজেই সেখানে উপস্থিত হয়ে ভুক্তভোগী এনামুল হককে  উদ্ধার করেন। থানা সুত্রে জানা যায়,  পুলিশ তাকে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে দর্পণ প্রজেক্ট থেকে উদ্ধার করে সেখান থেকে তুরাগ থানায় নিয়ে যায়। 
 
 
জানা যায়,এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এনামুল হক বাদী হয়ে ফয়সালসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে তুরাগ থানার অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী এনামুল হককে দর্পণ গ্রুপের এমডি ফয়সাল বিন রহমান  তার কয়েকজন লোক নিয়ে তাকে উত্তরা উত্তর মেট্রোরেল স্টেশন আরজ আলী মেম্বার রোড থেকে জোরজবরদস্তি করে গাড়িতে তুলে নয়ানগর পুরান কালিয়ার টেক এলাকায় দর্পণ প্রজেক্টের ভিতরে নিয়ে যায়। সেখানে তারস কয়েকজন মিলে তাকে  এলোপাতাড়ি কিল ঘুশি মারে। এক পর্যায় ফয়সাল বিন রহমান লোহা/শক্ত কাঠ দিয়ে তার পায়ের উরুতে পিটাইতে থাকে। এর পর তার পায়ের গোড়ালিতে বারি মারে। লোক মারফত  বিষয়টি জানতে পেরে তার স্রী সাজেদা  জাতীয় সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিলে তুরাগ থানার পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে গুরুতর অবস্থায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের পাঠায়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে  আত্মীয় স্বজনরা তাকে ইবনে সিনা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান।
 
 
বিষয়টি নিশ্চিত করে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই শ্বাসত দত্ত চৌধুরী  ইনকিলাবকে জানান,তারা দর্পণ প্রজেক্ট থেকে ভুক্তভোগী এনামুল হককে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। তিনি আরো বলেন, এনামুলের পায়ে আগাতের চিহ্ন রয়েছেন, তার পিঠে ও জখম রয়েছে।  সরেজমিনে দেখা যায়, ৪০/৫০ বিঘা জমি দখল করে গড়ে উঠেছে দর্পণ প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সাল বিন রহমান, পরিচালক পর্যদে রয়েছে মোবিনসহ আরো কয়েকজন। তারা সবাই  নিজেদেরকে জামাত নেতা বলে দাবি করেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে দলের প্রভাব খাটিয়ে তারা নাম মাত্র মুল্য দিয়ে এলাকার নিরীহ মানুষের জমি লিখে নেন। বাকি  টাকা চাইতে গেলে মামলার ভয় দেখিয়ে আতংক সৃষ্টি করতেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন দর্পন প্রজেক্টের এমডি তাদেকে তাদের জমিতে যাইতে দেয় না। ঐ এলাকার এক গণমাধ্যম কর্মী বলেন,  তার পরিচিত লোকজনের জমি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে।স্থানীয় কয়েকজন বলেন, তারা এতোতাই ভয়ংকর তাদের ভয়ে অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের অত্যাচার জুলুম নির্যাতন থেকে এলাকাবাসী নিস্তার চায়।
 
 
 
অপরদিকে উত্তরার প্রভাবশালী কয়েকজন  জামাত নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফয়সাল বিন রহমান জামাতের কোন কার্যক্রমের সাথে জড়িত নয়, তিনি দলে সক্রিয় নয়, সে কোন পদেও নেই।এছাড়াও সে মোহাম্মদপুর থাকে,  উত্তরায় জামাতের কোন পদ বা কার্যক্রমে নেই, তবে তারা আরো  বলেন দেশের অন্য কোন জায়গায় জামাতের কোন কমিটিতে আছেন কিনা তাদের জানা নেই। জামাতের নাম ভাঙ্গীয়ে জমি দখল করা বিষয়ে জানতে চাইলে জামাত নেতারা বলেন, এইটা তার ব্যক্তিগত  ইস্যু,  তার পাপের জন্য সে নিজেই দায়ী। তার খারাপ  কাজের দায়ভার কেউ নিবে না। 
 
 
 
কিডন্যাপ করে পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়ার বিষয় এবং অন্যের জন্য দখল করে রাখা ঘটনার সত্যতা জানতে গত দুই দিন যাবত দর্পনের এমডি ফয়সাল বিন রহমান এবং পরিচালক মুবিনকে তাদের মুঠো ফোনে কয়েকবার ফোন দিয়ে ও পাওয়া যায় নি। দর্পন গ্রুপের এমডি ও পরিচালকের  বক্তব্য নিতে তাদের দুই জনকে ফোন করার কয়েক ঘন্টা পর প্রতিবেদককে অন্যএক লোক ফোন দিয়ে বলেন, তাদের মধ্যে ব্যবসায়ীক টাকা পয়সার লেনদেন ছিলো, জিদের বসতে  মেরেছে বিষয়টি যেন এক তরফা না হয়।তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Talha


কমেন্ট বক্স