ঢাকা | বঙ্গাব্দ |

যশোরের ডাকাতিয়ায় সংঘর্ষে ১ যুবক নিহত ৫ জন আহত

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Oct 10, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:
ad728


যশোর জেলা প্রতিনিধি।।
মোঃ তারিক হাসান (রকি)

যশোর সদর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের ডাকাতিয়া দরগাপাড়ায় বৃহস্পতিবার সকালে ইজিবাইক চুরি নিয়ে সংঘর্ষে এক জন নিহত ও পাঁচ জন আহত হয়েছেন।
হতাহতের মধ্যে এক পরিবারের চার জন রয়েছেন। অপরপক্ষে রয়েছেন অভিযুক্ত হামলাকারী পিতা ও পুত্র। এ ঘটনায় পুলিশ পিতা-পুত্রসহ তিন জনকে হেফাজতে নিয়েছে।
হতাহতদের মধ্যে এক পক্ষে রয়েছেন নিহত চঞ্চল গাজী (২৮), তার পিতা মধু গাজী (৫২), মাতা হাসিনা বেগম (৫২) ও ভাই তুহিন গাজী (২৬)।
অপরপক্ষে রয়েছেন একই গ্রামের রবিউল গাজী (৩৮), তার ছেলে মুন্না গাজী (১৮)। তারা পুলিশ প্রহরায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া তরিকুলের বড় ভাই বিল্লাল গাজীকে আটক করেছে পুলিশ।
কোতোয়ালি থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন বলেন, ‘দুই পক্ষের বিরোধের জেরে সংঘর্ষে একজন নিহত ও উভয় পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’
নিহত চঞ্চল গাজীর পিতা মধু গাজী জানান, তার ছেলে চঞ্চল গাজী একই এলাকার রাশেদ আলীর ইজিবাইক ভাড়ায় চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। প্রায় এক মাস আগে শহরের পালবাড়ি মোড় থেকে চঞ্চলের ইজিবাইকটি চুরি হয়ে যায়।
এ ঘটনায় মাদক ব্যবসায়ী ও চোরচক্রের হোতা রবিউল গাজী এবং তার ভাই বিল্লাল গাজী জড়িত বলে তারা সন্দেহ করেন।
ইজিবাইক চুরির পর এলাকায় সালিশ বৈঠক ডাকা হলে উল্টো চালক চঞ্চল গাজীকেই দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। রবিউল ও বিল্লাল গাজী তাদের সিন্ডিকেটের সদস্যদের দিয়ে ইজিবাইকটি চুরি করিয়েছিল বলে অভিযোগ করেন মধু গাজী।
নিহতের ভাই আহত তুহিন গাজী বলেন, রবিউল গাজী তাদের ইজিবাইক চুরির সঙ্গে জড়িত। সে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা করে আসছে। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে মাদকবিরোধী অবস্থান নেওয়ায় শত্রুতা বেড়ে যায়।
এর জেরে বৃহস্পতিবার সকালে রবিউল, বিল্লাল ও তাদের সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে তিনি, তার ভাই চঞ্চল, পিতা মধু গাজী ও মা হাসিনা বেগম গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চঞ্চল গাজী মারা যান।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. মোবাশ্বীর হাসান জানান, সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে গুরুতর আহত অবস্থায় চঞ্চল গাজীকে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১টা ৩৫ মিনিটে তিনি মারা যান।
অভিযুক্ত রবিউল গাজী দাবি করেন, সকালে মধু গাজীর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তিনি ইন্টারনেট সংক্রান্ত বিষয়ে পিয়াস নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় মধু ও চঞ্চল গাজী হঠাৎ লাঠি দিয়ে তাকে মারধর শুরু করেন। তিনি দৌড়ে পাশের সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতে ঢুকে পড়লে তারা পিছু নিয়ে সেখানে গিয়েও হামলা চালান।
রবিউলের দাবি, তখন সাদ্দাম হোসেন প্রতিবাদ করলে তার সঙ্গে মধু ও চঞ্চলের বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে সাদ্দাম ঘর থেকে দা এনে মধু ও চঞ্চলকে কুপিয়ে জখম করেন।
কাশিমপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ইসলাম সরদার বলেন, রবিউল গাজী একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। সে চোরচক্রের নেতৃত্ব দেয়। মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় রবিউল ও তার দলবল চঞ্চল গাজীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পুলিশ একাধিকবার মাদক ব্যবসায়ী ও চোরচক্রের হোতা রবিউল গাজীকে আটক করলেও দুর্বল মামলায় আদালতে পাঠানো হয়। ফলে সে সহজেই জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Talha


কমেন্ট বক্স