বেনাপোল কাস্টমসে আলোচিত ঘুসকাণ্ডে অবশেষে রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এরআগে সোমবার (৬ অক্টোবর) দুদকের অভিযানে দুই লাখ ৭৬ হাজার টাকার ঘুসের টাকাসহ এনজিও সদস্য হাসিবকে আটক করে দুদক। কিন্তু রাজস্ব কর্মকর্তাকে গ্রেফতার না করা নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। দুদক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় উৎসুক জনতা নানা শ্লোগান দেন। তবে দুদক রাজস্ব কর্মকর্তার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে কমিশনারের জিম্বায় রেখে আসার বিষয়টি তাৎক্ষণিক প্রকাশ না করায় বিক্ষুব্ধ হন স্থানীয়রা। সেখানে চরম বিশৃ্খলারও সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে ঘুষের দুই লাখ ৭৬ হাজার টাকাসহ এনজিও সদস্য হাসিব হোসেনকে আটক করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তদন্তে হাসিব জেরায় স্বীকার করেন, উদ্ধারকৃত টাকা শামীমা আক্তারের জন্যই নেওয়া হচ্ছিল। দুদকের যশোর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দীন এর নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানের সূত্র ধরে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয় দুদক।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক জেরায় শামীমা আক্তার স্বীকার করেছেন যে, হাসিব তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন এবং ঘুষের টাকাটি তার জন্যই সংগ্রহ করা হচ্ছিল। দুদক এখন যাচাই করছে, এ চক্রের সঙ্গে কাস্টমস হাউসের আরও কেউ জড়িত কি না।
উপপরিচালক সালাহউদ্দীন বলেন, আমরা টাকা উদ্ধার করেই থেমে থাকিনি। যাঁরা এই ঘুষের টাকার পেছনে রয়েছেন, তাঁদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। বেনাপোল কাস্টমস ঘুষমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। তিনি আরোও জানান, আটক রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ও হাসিব হোসেনকে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং দুদকের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, দুদকের এমন অভিযান আমাদের নতুন করে আশাবাদী করেছে। আগে ফাইল ছাড়াতে ঘুষ দিতেই হতো, এখন মনে হচ্ছে পরিবর্তনের সময় এসেছে।
দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল কাস্টমস হাউস দীর্ঘদিন ধরেই ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে আলোচনায়। চলমান দুদক অভিযানকে অনেকে ‘বেনাপোলকে ঘুষমুক্ত করার প্রথম পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখছেন।
যশোর প্রতিনিধিঃ মোঃ তারিক হাসান (রকি)