ঢাকা | বঙ্গাব্দ |

নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে বিজিএমইএর ভোটগ্রহণ চলছে

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : May 31, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:
ad728

ক্ষমতার পালাবদলে পর্ষদ ভেঙ্গে দেওয়ার সাত মাসের বেশি সময়ের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব ঠিক করতে পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।

সংগঠনটির ২০২৫-২৭ মেয়াদের নেতৃত্ব নির্বাচনে শনিবার সকাল ৮টা থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, যা চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।

ঢাকার র‌্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেল ও র‌্যাডিসন ব্লু হোটেল চট্টগ্রাম বে ভিউতে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। এরপর পরিচালকরা সংগঠনের সভাপতি, সহসভাপতিসহ সাংগঠনিক নেতৃত্ব ঠিক করবেন।

এবারের নির্বাচনে ৩৫ পরিচালকের বিপরীতে তিনটি প্যানেলের মোট ৭৬ প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। ফোরাম এবং সম্মিলিত পরিষদ প্যানেল সব পরিচালক পদে প্রার্থী দিলেও, আরেক প্যানেল ঐক্যজোট পরিষদ দিয়েছে ছয়টিতে।

নির্বাচনি ইশতেহারে ১২ দফা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সম্মিলিত পরিষদ। এ প্যানেল লিডার আবুল কালাম। আর ফোরাম তাদের ইশতেহারে ১৪ দফা তুলে ধরেছে; এ প্যানেলের লিডার মাহমুদ হাসান খান। অপরদিকে মোহাম্মদ মহসিনের নেতৃত্বে ঐক্য পরিষদ প্যানেল ১৬ দফা ইশতেহার দিয়েছে।

ভোটগ্রহণে এবার ব্যাপক কড়কড়ি আরোপ করেছে বিজিএমইএ নির্বাচন বোর্ড। ভোটের নিরাপত্তায় ঢাকার কেন্দ্র র‌্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলের ভেতরে-বাইরে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সকালে ঢাকার র‌্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে গিয়ে দেখা গেল, প্রার্থী ছাড়া ভোট কেন্দ্রের সামনে কাউকে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না।

হোটেলের সামনে মোবাইল ফোন জমা রেখেই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হচ্ছে ভোটারদের।

এমনকি তিন প্যানেলের সর্মথকদেরও ভোট শুরু হওয়ার পরে হোটেলের সীমানার বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

হোটেল ফটকের সামনে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে নিজ নিজ প্যানেলের সমর্থন চেয়ে ভোট চাইতে দেখা যায় কর্মীদের।

তবে বেলা সোয়া ৯টার দিকে বিজিএমইএ প্রশাসক আনোয়ার হোসেন ও নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল পুলিশের সহায়তায় সেখান থেকেও প্রার্থীর সমর্থকদের সরিয়ে দেন।

দেলোয়ার হোসেন নামের একজন পুলিশ সদস্য হ্যান্ডমাইকে নিরাপত্তার স্বার্থে সবাইকে হোটেলের পাশে রেলস্টেশনের কাছের গাছতলায় দাঁড়ানোর অনুরোধ করছিলেন।

সুন্দর ও শৃঙ্খলার মধ্যে ভোট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের আগামী দিন ভালো হবে। সবাইকে সুশৃঙ্খল ও সুন্দর হতে হবে। ভোটের পরিবেশ নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না আশা করছি।”

বিজিএমইএ প্রশাসক ও ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রে ভোট যথা সময়ে শুরু হয়েছে। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভোট শেষে ফলাফল দেওয়া হবে। সবকিছু সরাসরি দেখানো হচ্ছে বিজিএমইএর ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলে।

হোটেলের মিডিয়া কর্নারে স্থাপিত বড় পর্দায় প্রতি মুহূর্তের ভোটের সংখ্যা দেখানো হচ্ছে। তাতে বেলা পৌনে ৯টা পর্যন্ত ঢাকা কেন্দ্রের ১ হাজার ৫৬১টি ভোটের মধ্যে ৭২টি ভোট পড়ার তথ্য পাওয়া গেল।

গণআন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগের পতন হলে বিজিএমএইএর পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি ওঠে। সে বছরের ২০ অক্টোবর পর্ষদ ভেঙে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে বিজিএমইএর প্রশাসকের দায়িত্বে বসায় সরকার।

তার ওই দায়িত্বের ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা থাকলেও ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ তৈরি পোশাক খাতের শ্রম অসন্তোষ তৈরি হলে সেটি পিছিয়ে যায়। নির্দিষ্ট সময়ের পর আরও চার মাস পার হয়ে বিজিএমইএতে নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

এবারের নির্বাচনে কেবল সচল কারখানার উদ্যোক্তাদের ভোটার করায় ভোটার সংখ্যা কমেছে। আগের নির্বাচনে ২ হাজার ৪৯৬ জন ভোটার হলেও এবার এ সংখ্যা ১ হাজার ৮৬৫। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ জন ও চট্টগ্রামে ভোটার ৩০৩ জন।

প্রার্থী কারা

সম্মিলিত পরিষদের ঢাকার প্রার্থী হয়েছেন– আবুল কালাম, ফারুক হাসান, খন্দকার রফিকুল ইসলাম, আবদুল্লাহ হিল রাকিব, আসিফ আশরাফ, মশিউল আজম সজল, মোস্তাজিরুল শোভন ইসলাম, আশিকুর রহমান, ফিরোজ আলম, মো. নুরুল ইসলাম, সৈয়দ সাদিক আহমেদ, মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, মো. শাহদাৎ হোসেন, মহিউদ্দিন রুবেল, রেজাউল আলম মিরু, আবরার হোসেন সায়েম, মোহাম্মেদ কামাল উদ্দীন, সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী সাগর, তামান্না ফারুক থিমা, মির্জা ফায়েজ হোসেন, হেলাল উদ্দিন আহমেদ, লিথি মুনতাহা মহিউদ্দিন, এ কে এম আজিমুল হাই, মাঞ্জুরুল ফয়সাল হক, এস এম মনিরুজ্জামান ও মোহাম্মদ রাশেদুর রহমান।

সম্মিলিত পরিষদের চট্টগ্রামের প্রার্থীরা হলেন– এস এম আবু তৈয়ব, রাকিবুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ মুসা, অঞ্জন কুমার দাশ, নাফিদ নবি, সৈয়দ মোহাম্মেদ তানভীর, মোস্তফা সারোয়ার রিয়াদ, মো. আবসার হোসেন ও গাজী মো. শহীদ উল্লাহ।

ফোরাম প্যানেলের ঢাকার প্রার্থী মাহমুদ হাসান খান, মোহাম্মদ আবদুস সালাম, কাজী মিজানুর রহমান, শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, ইনামুল হক খান, হাসিব উদ্দিন, মোহাম্মদ সোহেল, শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ, ভিদিয়া অমৃত খান, মোহাম্মদ আব্দুল রহিম, শাহ রাঈদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ হোসনে কমার আলম, এ বি এম শামছুদ্দিন, নাফিস উদ দৌলা, সুমাইয়া ইসলাম রোজালিন, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মজুমদার আরিফুর রহমান, মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া, ফাহিমা আক্তার, আসেফ কামাল পাশা, রশীদ আহমেদ হোসাইনী, রুমানা রশীদ, সামিহা আজিম, রেজোয়ান সেলিম ও ফয়সাল সামাদ।

ফোরামের চট্টগ্রামের প্রার্থীরা হলেন– সেলিম রহমান, মোহাম্মদ সাইফ উল্যাহ মানসুর, মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী, এমডি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাকিফ আহমেদ সালাম, এনামুল আজিজ চৌধুরী, মো. এমদাদুল হক চৌধুরী, মির্জা আকবর আলী চৌধুরী ও রিয়াজ ওয়াইজ।

অপরদিকে ঐক্যজোট পরিষদের প্রার্থী হলেন– মোহাম্মদ মহসিন, দেলোয়ার হোসাইন, খালেদ এমডি ফয়সাল ইকবাল, এ কে এম আবু রায়হান, এমডি মহসিন অপু ও শেখ এরশাদ উদ্দিন।

বিজিএমইএ নির্বাচনি বোর্ডের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল।



নিউজটি আপডেট করেছেন : Talha


কমেন্ট বক্স