ধৈর্য ও সাহস মানুষকে বিজয় এনে দেয়। ঠিক তেমনই একটি ঘটনা। ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের আলগী এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক জাহাঙ্গীর আলম দীর্ঘ ১২ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর পেলেন ন্যায্য রায়।
জানাযায়, জাহঙ্গীরের দাদার প্রায় ৬০ শতাংশ জমি থাকা সত্ত্বেও তিনি ও তার তিন মেয়ে অসহায়তার সঙ্গে জীবনযাপন করছিলেন। আদালতের রায়ে শুধু তিনি নন, এলাকাবাসীও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
জাহাঙ্গীর আলমের সংগ্রামের গল্পটি সাধারণ কোনো আইনি লড়াইয়ের গল্প নয়। প্রভাবশালী এক গোষ্ঠী সম্পর্কে চাচা তার জমি ভুয়া নিলামের মাধ্যমে দখলের চেষ্টা করলে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন। এরপর শুরু হয় দীর্ঘমেয়াদি আইনি যুদ্ধ। আর্থিক অনটন ও সামাজিক চাপের মধ্যে থেকেও তিনি লড়াই চালিয়ে যান, তার তিন মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আইনী লড়াই চালিয়ে যান। গত ২৩ মার্চ ২০২৫ আদালতের জাহাঙ্গীরের পক্ষে রায় ঘোষণা করলে তিনি বলেন, "আমার বিশ্বাস ছিল, আদালতই শেষ পর্যন্ত ন্যায় দেবে। আজ আমি সেই ন্যায় পেয়েছি। আমার মেয়েদের মুখে হাসি ফোটানোর এটাই প্রথম পদক্ষেপ।"
তার এই জয় শুধু তার ব্যক্তিগত বিজয় নয়, বরং সাধারণ মানুষের আইনি ব্যবস্থায় আস্থা রাখার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ।
এলাকাবাসীরা জানান, জাহাঙ্গীর আলমের এই লড়াই শুধু তার একার লড়াই ছিল না, বরং এটি সমাজের সব অসহায় মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। রায়ের পর এলাকায় আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা লিপি বেগম বলেন, আদালত প্রমাণ করল, ন্যায়বিচার সব সময় দেরিতে হলেও আসে। জাহাঙ্গীর ভাইয়ের বিজয় আমাদের বিজয়। এই রায়ে শুধু জাহাঙ্গীরের জমির মালিকানা নিশ্চিতই হয়নি, বরং এটি একটি বার্তা দিয়েছে যে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।
আইন সবার জন্য সমান। কিন্তু আজকাল বিচারের বাণীই যেনো নিভৃতে কাঁদে। তবুও দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয়।
রিকসা চালক জাহাঙ্গীর আলমের এই সংগ্রাম এবং বিজয় সাধারণ মানুষকে নতুন আলোর স্বপ্ন দেখাবে।
ভোলা জেলা প্রতিনিধি :গাজী তাহের লিটন