ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা জংশন বাজারের সুইটি জুয়েলার্সের মালিক সোহাগ বালা গ্রাহকের কোটি টাকার বন্ধকী স্বর্ণালংকার নিয়ে সপরিবারে উধাও হয়েছে পাঁচ দিন। তার কোনো খোঁজও মিলছেনা। ৩১ মে ২০২৫ থেকে বন্ধ রয়েছে ভোলার বটতলার দোকানটি। এর মধ্যে শত, শত গ্রাহক বিক্ষোভও করেছেন।
এদিকে সোহাগ গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে গেছে, নাকি অদৃশ্য কারণে আত্মগোপনে আছেন নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ। তবে ধারনা করা হচ্ছে দোকান এবং বাড়ী-ঘরে তালাবদ্ধ থাকায় পালিয়ে গেছে এমন গুঞ্জন উঠেছে। নারীদের শেষ গচ্ছিত সম্পদ হারিয়ে শত শত নারীদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে ইলিশা। প্রিয়জন হারানোর মত শোক বইছে নিম্নবিত্ত পরিবারের নারীদের মধ্যে। ঈদ উপলক্ষে নতুন বিবাহ অনুষ্ঠানে কেউ জামাইয়ের জন্য কেউ বা হবু বউয়ের জন্য স্বর্ণ বানাতে পুরো টাকা দিয়ে হতাশ। কেউ স্বামীকে না জানিয়ে আত্মীয়-স্বজনের বিপদে স্বর্ণ বন্ধক রেখে টাকা নিয়েছে। আবার সে টাকা ফেরত দিয়েছে। দুইদিন পর স্বর্ণ ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও আজ পালিয়ে যাওয়ার খবরে বারবার অজ্ঞান হতে দেখা গেছে অনেক নারীদের। অনেকের স্বামী খবর জানতে পারলে সংসার বিচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানা গেছে।
হাসনুর নামের এক নারী জানান, আমার ৭ ভরি স্বর্ণ। আমার মেয়ের, ননদের স্বর্ণ এনে বন্ধক রেখেছি সব শেষ। জিনিস না নিলে আমার মাইয়ার (মেয়ে) সংসার থাকবে না। বারেক দফাদার বলেন, ঈদের পরে মেয়ের বিবাহ, তাই দেড় ভরি স্বর্ণ দিয়ে জিনিস বানাতে দিয়েছি। টাকাও পরিশোধ করেছি। এখন আমার সব শেষ। এছাড়া নাজমা, ফাতেমা, হাজেরা, খালেক, অদুদ মাঝিসহ অসংখ্য গ্রাহক বার বার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। তবে সোহাগের বাড়ীতে গিয়ে ও কেউ না থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ভোলা জুয়েলার্স মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অবিনাশ নন্দী জানান. সোহাগের খবরটি আমি শুনেছি। সোহাগ আমাদের সংগঠনের সদস্য নয়, তবুও যেহেতু স্বর্ণ ব্যবসায়ী তার এ ঘটনা দুঃখজনক।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্রাহকরা সোহাগের ইলিশা বটতলা জুয়েলার্সের সামনে বিক্ষোভও করেছে। তার কোন খোঁজ এখনো মিলেনি। কী হবে গ্রাহকদের বন্ধকী কোটি টাকার স্বর্ণালংকারের, সোহাগ কী আবার ফিরে আসবে; এমন নানা প্রশ্ন দানা বেঁধে উঠেছে ভুক্তভোগি গ্রাহক ও স্থানীয় জনমনে।